৯ কোম্পানির শেয়ার কারসাজিতে ডুবেছে বিনিয়োগকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদায়ী সপ্তাহে (২৬-৩০ নভেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দরপতনের শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছে কারসাজির ৯ কোম্পানির শেয়ার। যেগুলো হলো- বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, দ্য ঢাকা ডাইং, ইভিন্স টেক্সটাইল-ইটিএল, প্যাসেফিক ডেনিমস-পিডিএল, ফু-ওয়াং সিরামিক, শ্যামপুর সুগার, অলিম্পিক অ্যাক্সেসরিজ, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড ও ইয়াকিন পলিমার লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে শ্যামপুর সুগার ‘জেড’ ক্যাটাগরির। বাকি ৮টি কোম্পানিই ‘বি’ ক্যাটাগরির শেয়ার। বিদায়ী সপ্তাহে কোম্পানিগুলোর শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের লোকসান দাঁড়িয়েছে ১০ শতাংশের ওপর থেকে ২৩ শতাংশ পর্যন্ত। লাভের আশায় চড়া দামে শেয়ারগুলো কিনে এখন বড় লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি লোকসানে পড়েছে বিডি থাই অ্যালুমিনিয়ামের শেয়ারে। কোম্পানিটির শেয়ার সপ্তাহের প্রথম ভাগে ২০ টাকার ওপরে লেনদনে হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহের শেষভাগে সাড়ে ১৫ টাকায় নেমে এসেছে। এতে কোম্পানিটির শেয়ার কিনে বিনিয়োগকারীরা ২৩ শতাংশের বেশি লোকসানে পড়েছে। কোম্পানিটি একটি লোকসানি কোম্পানি। সমাপ্ত অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি।

দ্য ঢাকা ডাইংও একই রকম লোকসানি কোম্পানি। এই কোম্পানিটিও সমাপ্ত অর্থবছরে কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি। তারপর কয়েক দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। ফ্লোর প্রাইসে থাকা ১৩ টাকা ২০ পয়সার শেয়ারটি কয়েক দিনের মধ্যে ৩০ শতাংশ বেড়ে ১৭ টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। এরপর সংশোধন হয়ে ফের ফ্লোর প্রাইসে নেমে গেছে। এখন বিনিয়োগকারীরা শেয়ারটিতে বড় লোকসান গুণছেন। আবার ফ্লোর প্রাইসের কারণে শেয়ারটি বিক্রি করার ক্ষেত্রেও এক ধরনের অনিশ্চতায় সম্মুখীন।

এদিকে, সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ইটিএল, পিডিএল, ফু-ওয়াং সিরামিক যৎসামান্য ডিভিডেন্ড দিয়ে বিনিয়োগকারীদের মনোযোগ আকৃষ্ট করেছিল। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, কোম্পানিগুলো ডিভিডেন্ড কম দিলেও এসব শেয়ারের দামও কম। কোম্পানিগুলো লোকসান থেকে মুনাফায় ফিরেছে। যার কারণে শেয়ারগুলোতে অনায়াশেই বিনিয়োগ করা যায়। কিন্তু বিদায়ী সপ্তাহে বাজার মন্দা থাকার কারণে শেয়ারগুলোর দরে বড় পতন হয়েছে। যে কারণে তারাও শেয়ারগুলোতে বড় লোকসান গুণছেন। তবে বাজার ঠিক হয়ে গেলে শেয়ারগুলোর দামও ঠিক হয়ে যাবে বলে তারা বেশ আশাবাদী।

অন্যদিকে, শ্যামপুর সুগার ‘জেড’ ক্যাটাগরির বড় লোকসানি কোম্পানি। এটি নিয়ে কারসাজিকারিরা বছরজুড়েই টানাটানি করছে। শেয়ারটিতে চড়া দামে বিনিয়োগ করে তারা এখন বড় লোকসানের মুখে।

অপরদিকে, অলিম্পিক অ্যাক্সেসরিজ ও ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লোকসানি ও ডিভিডেন্ড না দেওয়া কোম্পানি। ডিভিডেন্ড না দেওয়ার ঘোষণার আসার পরও কোম্পাগুলোর শেয়ার কারসাজিদের দৌরাত্বে বেড়েছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লাভের আশায় বেশি দামে শেয়ারগুলোতে বিনিয়োগ করেছেন। যে কারণে তাদেরে লোকসানের পাল্লা এখন আরও ভারি হয়েছে।

এছাড়া, মালিকানা পরিবর্তনের গুঞ্জনে ইয়াকিন পলিমারের শেয়ারদর বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। শেয়ারটির দাম বিদায়ী সপ্তাহের শুরুতে ৩৪ টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। তারপর মন্দার চাপে শেয়ারটি ফের পেছনে ফিরে এসেছে। মালিকানা পরিবর্তন হলে শেয়ারটির দাম অনেক দূর যাবে-এমন আশায় যারা চড়া দামে শেয়ারটি কিনেছেন, তারা এখন বড় লোকসানের সম্মুখীন। বিএসইসি সূ্ত্রে জানা গেছে, ইয়াকিন পলিমারের মালিকানা পরিবর্তনের প্রক্রিয়া বর্তমানে কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *