নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই শেয়ারবাজারের সূচক ছিল নিম্নমুখী। সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনে কিছুটা উত্থানে ফিরলেও পরবর্তী দুই কর্মদিবসে আবারও পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়। তবে আজ (১৬ অক্টোবর) বাজার সেই ধারাবাহিক পতন থেকে কিছুটা বেরিয়ে এসেছে। আজকের লেনদেনে দিনভর সূচকের নাটকীয় উত্থান-পতন দেখা গেলেও, শেষ পর্যন্ত তা মাত্র ৩ পয়েন্টের সামান্য বৃদ্ধি নিয়ে থিতু হয়। যদিও সূচক কিছুটা ইতিবাচক অবস্থানে স্থির হয়েছে, তবুও টাকার অঙ্কে লেনদেন কমেছে।
সপ্তাহজুড়েই বাজার ছিল অস্থির। ডিএসইতে সপ্তাহ শুরু হয়েছিল ৫ হাজার ৩৮৩ পয়েন্ট নিয়ে, যা সপ্তাহ শেষে এসে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১১৯ পয়েন্টে। অর্থাৎ, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন থেকে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা খোয়া গেছে।
বাজারের এই ধারাবাহিক দরপতন এমন এক সময়ে ঘটছে, যখন জুন ক্লোজিং হওয়া কয়েকটি কোম্পানি তাদের ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করেছে। এমনকি আগামী সপ্তাহেও বেশ কয়েকটি কোম্পানি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সাধারণত, এমন পরিস্থিতিতে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোই স্বাভাবিক; কিন্তু বাজারে দেখা যাচ্ছে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র। এই লাগাতার পতনের কারণে সূচক এবং লেনদেন উভয়ই প্রায় তলানিতে এসে ঠেকছে।
বাজার সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, কোম্পানিগুলোর বোর্ড সভায় ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত ঘোষণার পর এবং ভালো ডিভিডেন্ড এর ভিত্তিতে বাজারে নতুন করে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ তৈরি হবে। আজকের সামান্য ইতিবাচক অবস্থানকে বাজারের মোড় ঘোরানোর একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন তাঁরা এবং আশা করছেন আগামী সপ্তাহে শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দেবে।
শেয়ারবাজারে দিনভর লম্ফঝম্প, শেষে সামান্য স্বস্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা দরপতনের পর আজ বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে এক নাটকীয় উত্থান-পতনের খেলা দেখা গেল। দিনের শুরুতে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি হলেও শেষ ভাগে তা প্রায় স্থির হয়ে যায়। তবে সূচক একেবারে তলানিতে না নেমে সামান্য বৃদ্ধি নিয়ে থিতু হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসার ক্ষীণ আশা তৈরি হয়েছে।
আগের দিন বুধবার শেয়ারবাজারে এক বড় পতন হয়েছিল, যেখানে ডিএসই’র প্রধান সূচক প্রায় ৮১ পয়েন্ট কমে গিয়েছিল। সেই ধারার বিপরীতে গিয়ে আজকের দিনের লেনদেন শুরু হয় দারুণ চাঙ্গা মেজাজে। দিনের প্রথম আধা ঘণ্টায় ডিএসই’র সূচক প্রায় ৬০ পয়েন্ট বেড়ে যায়, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছিল।
কিন্তু এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দ্রুতই শুরু হয় বিক্রয় চাপ এবং পতন প্রবণতা। এক পর্যায়ে সূচক আগের দিনের চেয়ে প্রায় ৪২ পয়েন্ট কমে যায়, যা পতন-উত্থানের খেলায় বিনিয়োগকারীদের আবার হতাশ করে তোলে। তবে দিনের শেষ ভাগে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালায়। বেলা পৌনে ২টায় ডিএসই’র সূচক প্রায় ২৩ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হচ্ছিল এবং দিনশেষে তা প্রায় ৩ পয়েন্টে স্থির হয়। দিনের এই নাটকীয় গতিপথ শেষে সূচক সামান্য হলেও ইতিবাচক অবস্থানে স্থির হওয়ায় বাজারপ্রেমীরা কিছুটা আশান্বিত।
বৃহস্পতিবাজারের বাজার পর্যালোচনা
আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২.৯০ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১১৯.৪১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুটি সূচকের মধ্যে, ডিএসই-৩০ সূচকটি সামান্য ০.৮৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৬৭.৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে, শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানিগুলোর সূচক ডিএসইএস ৫.০৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৬.২৯ পয়েন্টে নেমে এসেছে।
লেনদেনের দিক থেকে আজ ডিএসইতে মোট ৪৪৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যা ছিল আগের কর্মদিবসের (৪৮৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা) তুলনায় ৪৩ কোটি ১২ লাখ টাকা কম। অর্থাৎ, সূচকের সামান্য উত্থান হলেও বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বা লেনদেনের আগ্রহ আজ কিছুটা কম ছিল।
আজ ডিএসইতে মোট ৩৯৮টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৪টির, কমেছে ১৭৯টির এবং ৬৫টি প্রতিষ্ঠানের দর ছিল অপরিবর্তিত। অর্থাৎ, দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির চেয়ে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা আজ তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) আজ লেনদেনে দুর্বলতা দেখা গেছে। এখানে মোট ৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের (১৪ কোটি ৪ লাখ টাকা) তুলনায় প্রায় ৪ কোটি ১০ লাখ টাকা কম।
সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৮২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে মাত্র ৪৭টির, কমেছে ১১২টির এবং ২৩টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৪.৬৪ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ৪৬০.২১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে আগের কর্মদিবসে এই সূচক ১৮০.১৩ পয়েন্ট কমেছিল।

