শেয়ারবাজারে গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে বিএসইসি’র কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে যারা শেয়ারবাজারে অস্থিরতা তৈরি করছে, তাদের খুঁজে বের করতে কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিতে দলনেতা হিসেবে রয়েছেন বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ ফারুক হোসেন। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপক মোঃ তাহসিন আহমেদ এবং সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মোঃ মাহমুদুর রহমান।

দশ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত শেষ করে বিএসইসির কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিএসইসি সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বাজারে অনাকাংখিত অস্থিরতা বিরাজ করছে। কিছু অসাদু ব্যক্তি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এর স্থিতিশীলতা ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে লোকসানে তাদের শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে।

বিএসইসি বলেছে, অনেক ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা তাদের কর্তৃপক্ষ এবং বিনিয়োগকারীদের মার্জিন লোন সম্পর্কে এবং শেয়ারবাজার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা দিচ্ছে। যার ফলে বাজারে মন্দাভাব আরও গভীর হচ্ছে।

বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার, বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি এবং অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত নানা বিষয় নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। যা বাজারের মন্দাভাবকে আরও বেগবান করে তুলছে।

এর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে শেয়ারবাজার নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে মাহবুবুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মচারী মাহবুবুর রহমানের ২০২১ সালের ডিসেম্বরে শের-ই-বাংলা নগর থানায় বিএসইসি একটি সাধারণ ডাইরী দায়ের করে। ওই ডায়েরির ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর, “শেয়ার বাজার ২০২১” শিরোনামের একটি ফেসবুক পেজের পোস্টে তিনি লিখেন “সবাই, আপনার যা কিছু শেয়ার আছে বিক্রি করে শেয়ারবাজার ছেড়ে দিন। সূচকটি ৫৬০০-এ নেমে আসবে। আমি এটা বলছি না। আতঙ্ক, এটাই বাস্তবতা।”

বিএসইসির সাধারণ ডায়েরিতে বলা হয়েছে, মাহবুবুর রহমান ফেসবুক পেজের মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতারণা করে আসছেন।

ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা শেয়ারবাজার নিয়ে গুজব ছড়ায় তাদের চিহ্নিত করতে গত বছর বিএসইসি একটি ‘সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং সেল’ গঠন করে।

শেয়ারবাজার সংক্রান্ত গুজব নিয়ন্ত্রণে বিএসইসি বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ারবাজার নিয়ে মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় চলতি বছর মার্চ মাসে মঈনুদ্দিন তামিম নামে এক শেয়ার বিনিয়োগকারীকে এক দিনের রিমান্ডে দেয় ঢাকার আদালত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *