বিএসইসির উদ্যোগে বিনিয়োগে ফিরছে আইসিবি

বিশেষ প্রতিনিধি মহসিন আলিফ

পুঁজিবাজার

বিএসইসির উদ্যোগে বিনিয়োগে ফিরছে আইসিবি

by adminমে ১৬, ২০২২10SHARE0

বিশেষ প্রতিনিধি মহসিন আলিফ

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ঋণ ও আমানতের অর্থ পরিশোধ করতে চাপে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।

ফলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকৃত শেয়ার বিক্রি করে এ ঋণ পরিশোধ করছে প্রতিষ্ঠানটি। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। ফলে সোমবার (১৬ মে) এক দিনের ব্যববধানের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক ১৩৪ পয়েন্ট ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সূচক ২২৯ পয়েন্ট পতন ঘটে।

তাই পুঁজিবাজারের এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ এবং সক্ষমতা বাড়াতে আইসিবির পরিপক্ক ঋণ নবায়নের কার্যকরি উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফলে এখনই এ ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে না আইসিবিকে। এতে প্রতিষ্ঠানটিকে ঋণ পরিশোধ করতে শেয়ার বিক্রির চাপ থাকছে না। এদিকে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) থেকে আইসিবিকে আরও ৫০ কোটি টাকার তহবিল দেওয়া হচ্ছে। ফলে শেয়ার বিক্রির পরিবর্তে বিনিয়োগে ফিরছে আইসিবি।

সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (১৬ মে) সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনসহ আরও কয়েকটি কোম্পানির কাছে ঋণ নবায়ন করার জন্য চিঠি দিয়েছে আইসিবি। এ বিষয়টি দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির থেকে সুপারিশ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আইসিবির ঋণ শিগগিরই নবায়ন করা হবে।

এদিকে মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড থেকে আইসিবিকে আরও ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের জন্য দেওয়া হচ্ছে, যা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আগামীতে আইসিবি যাতে পুঁজিবাজারে তারল্য বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে সেজন্য তহবিলের যোগান দেওয়া হচ্ছে। এককথায় আইসিবির সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। আর আইসিবি তাদের শেয়ার বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করার জন্য যে তহবিল সংগ্রহ (রিয়েলাইজড) করেছিল, তা মঙ্গলবার (১৭ মে) থেকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হবে।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ছে কিনা তা যাচাই করে দেখছে বিএসইসি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহীত তথ্যে দেখা গেছে, মার্চ মাসের সকল ডিলারের বিনিয়োগ ছিল প্রায় ৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। আর এপ্রিল মাসের শেষে এ বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ফলে গত দেড় মাসে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। এ বিনিয়োগ বাড়াতে কশিন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ডিলাররা তাদের বিনিয়োগ বাড়াবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।

এদিকে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর নিজস্ব পোর্টফোলিওর বিনিয়োগ কীভাবে বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। এদিকে আসন্ন বাজেটে পুঁজিবাজারবান্ধব করার লক্ষ্যে বিএসইসির পক্ষ থেকে বেশ কিছু প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিনা শর্তে অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার সুযোগ রাখার বিষয়টি জোর দিচ্ছে কমিশন। ফলে আগামী বাজেট পুঁজিবাজারবান্ধব হবে বলে আশা করছে বিএসইসি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, কমিশনের পক্ষ থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানো উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে আইসিবির গৃহীত ঋণ নবায়ন করার বিষয়ে কমিশন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। কমিশন আশা করছে আইসিবির এ টার্ম লোন শিগগিরই রিনিউয়াল হয়ে যাবে। এর মাধ্যমে আগামীতে তারল্য বাড়ানো ও পুঁজিবাজারের উন্নয়নে আইসিবি অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। আর আরইসিবির বিনিয়োগকে আরও ত্বরান্বিত করতে সিএমএসএফ থেকে ৫০ কোটি টাকা দেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারবান্ধব বাজেট প্রণয়নের লক্ষ্যে বিএসইসির পক্ষ থেকে বেশ কিছু প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। আর কমিশন থেকে এ বিষয়ে খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। যেন বিএসইসির বাজেট প্রস্তাবনার প্রতিফলন দেখা যায়, যা পুঁজিবাজারে উন্নয়নে অনেক সহায়ক হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *