বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন ডলার: আইএমএফ

নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ২৬ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার। কিছু দিন আগেও এটা ছিল ৪০ বিলিয়নেরও কাছাকাছি।এখন এটা কমে ২৬.০২ ০২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

সোমবার (৭ নভেম্বর) আকুর বিল সমন্বয় হয়ে যাবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।

এশিয়ান কিয়ারিং ইউনিয়ন (আকু) বিলের ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করার পর রিজার্ভ কমে দাড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলারে। এশিয়ান কিয়ারিং ইউনিয়ন (আকু) হলো এমন একটি ব্যবস্থা যার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো আঞ্চলিক লেনদেনের জন্য আমদানি পেমেন্ট নিষ্পত্তি করে। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এর সদস্য। এই ব্যবস্থায় দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে প্রতি দুই মাস অন্তর আমদানির অর্থ পরিশোধ করতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইএমএফের চলমান বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশের রিজার্ভের হিসাব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) সরবরাহ করা ৭ বিলিয়ন ও শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ২০ কোটি ডলার রিজার্ভে দেখাচ্ছে। এছাড়া গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ড (জিটিএফ) ২০ কোটি, লং টার্ম ফিন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি (এলটিএফএফ) তহবিলে ৩ কোটি ৮৫ লাখ, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমানকে ৪ কোটি ৮০ লাখ এবং ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইটিএফসি) আমানত রিজার্ভে দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। এসব অর্থ রিজার্ভ থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলছেন আইএমএফ।

বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে ডলার সংকটে জর্জরিত। এদিকে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। ফলে প্রয়োজনীয় আমদানি ব্যয় মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে। সাধারণত ৩ মাসের আমদানিয় ব্যয় মেটাতে পারাকে ভালো রিজার্ভ হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ সাড়ে ৪ মাস পর্যন্ত আমদানিয় ব্যয়ে মেটাতে সক্ষম। এরপরও কি বাংলাদেশের অর্থনীতি ঝুঁকিতে রয়েছে? যেখানে ভারত আমদানি ব্যয় মেটাতে পাড়বে ৯ মাস। ভারতের সাথে তুলনা করলে অবশ্যই এটি ঝঁকিপূর্ণ। যদিও বাংলাদেশ অর্থনীতিতে ভারতের চেয়ে এগিয়ে। কারণ বাংলাদেশের মাথা পিছু আয় ভারতের চেয়ে বেশি।

এদিকে ডলার সংকটের প্রভাব পুরো অর্থনীতিতে পড়তে শুরু করেছে। ডলার সংকটের কারণে অধিকাংশ ব্যাংক ঋণ খোলা এড়িয়ে যাচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের শুরু থেকে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ৪৮৯ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। গত বছরের আগস্টে সর্বোচ্চ রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৮০০ বিলিয়ন ডলার।

চলতি বছরের অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছে মাত্র ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ মার্কিন ডলার। যা গত ৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এক মাসে রেমিট্যান্স কমেছে ১ কোটি ৪১ লাখ ডলার। সেপ্টেম্বরে রেমিটেন্স এসেছিলো ১৫৩ কোটি ৯৫ লাখ ডলার।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *