ফ্লোর ভাঙার চেষ্টায় বড় দুই কোম্পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে আজ লেনদেন হওয়া ৩৫৪টি কোম্পানির মধ্যে ২০৯টি কোম্পানি ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে বড় দুই কোম্পানি ফ্লোর ঠেলে ওপরে উঠার চেষ্টা করেছিল। কোম্পানি দুটি হলো বেক্সিমকো লিমিটেড ও ফরচুন সুজ লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানি দুটির মধ্যে আজ ফরচুন সুজ লেনদেনের এক পর্যায়ে ফ্লোর প্রাইস ভেঙ্গে কিছুটা ওপরে উঠেছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর তার ফের ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান নেয়। তবে কোম্পানিটির আজ বিশাল লেনদেন করে ডিএসইর লেনদেন তালিকায় ১৩ নম্বরে স্থান করে নিয়েছে।

অন্যদিকে, বেক্সিমকো লিমিটেড ফ্লোর প্রাইস অতিক্রম করার চেষ্টা করেও সফল হয়নি। ফ্লোর প্রাইসেই কোম্পানির বিশাল লেনদেন হয়েছে। যার ফলে ডিএসইর লেনদেন তালিকায় ১২ নম্বর ক্রমিকে অবস্থান নিয়েছে।

গত ২৯ জুলাই বিএসইসি তালিকাভুক্ত প্রতিটি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়ার পর আলোচ্য দুই কোম্পিানির একটি ফরচুন সুজের বিনিয়োগকারীরা প্রথম থেকেই ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছেন। অপর কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড সম্প্রতি ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকলেও প্রতিদিন বিশাল ভলিউমে ট্রেড হচ্ছে। আজকেও এর ব্যতিক্রম ছিল না।

অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীদের মতে, মৌলভিত্তি সম্পন্ন এই দুই কোম্পানি অচিরেই ফ্লোর প্রাইস ভেঙ্গে হয়তো উপরে ওঠে যাবে। কারণ এই দুই কোম্পানি ভালো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে।

এই দুই কোম্পানির মধ্যে বেক্সিমকো লিমিটেড আগের দিন রোববার ক্লোজিং দর ছিল ১১৫ টাকা ৬০ পয়সা। আজও কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১৫ টাকা ৬০ পয়সায়। অর্থাৎ ফ্লোর প্রাইসেই কোম্পানিটির ১৯ লাখ ৯২ হাজার ৭৫৯টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২৩ কোটি ৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন:সোমবার ব্লক মার্কেটে ৫ কোম্পানির বিশাল লেনদেন

বেক্সিমকো লিমিটেড

কোম্পনিটির বাজারদর পর্যালোচনাঢ দেখা যায়, গত ২৯ জুলাই ফ্লোর প্রাইস আরোপের পর কোম্পানিটির শেয়ারের দর উপরের দিকে উঠতে থাকে এবং এক পর্যায়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ শেয়ারটির দর ১৪০ টাকা ৩০ পয়সায় ওঠে যায়। এই হিসাবে কোম্পানিটির শেয়ারদর দেড় মাসের ব্যবধানে ২৪ টাকা ৭০ পয়সা বা ২১.৩৬ শতাংশ বেড়ে যায়। এরপর একটানা দর কমে ফ্লোর প্রাইস ১১৫ টাকা ৬০ পয়সায় নেমে বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে। এই হিসাবে কোম্পানিটির শেয়ারদর ২৪ টাকা ৭০ পয়সা বা ২১.৩৬ শতাংশ কমেছে।

গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল সর্বনিম্ন ১১২ টাকা ১০ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ১৮৭ টাকায় ৯০ পয়সা।

১৯৮৯ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন মূলধন ১ হাজার কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৮৭৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ৫ হাজার ৮১৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৮৭ কোটি ৬৩ লাখ ১৮ হাজার ৮৭৯টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৩৩.৯৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৮.৪১ শতাংশ, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৬.৮৯ শতাংশ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ০.৭৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

৩০ জুন ২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য কোম্পানিটি ৩০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে।

অন্যদেকে, ফরচুন সুজের আগের দিন রোববার ক্লোজিং দর ছিল ৭৯ টাকা ৫০ পয়সা। আজ ফ্লোর প্রাইস ভেঙে সর্বোচ্চ ৮০ টাকায় ওঠেছিল। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৯ টাকা ৫০ পয়সায় বা ফ্লোর প্রাইসে। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটি ফ্লোর প্রাইস এবং এর ওপরে ২৭ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪১টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২১ কোটি ৯০ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।

কোম্পনিটির বাজার দর পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ২৯ জুলাই ফ্লোর প্রাইস আরোপের পর কোম্পানিটির শেয়ারদর ফ্লোর প্রাইসেই লেনদেন হতে থাকে। আর ব্লক মার্কেটে প্রচুর লেনদেন হয়। আজও ব্লক মার্কেটে কোম্পানিটির বিশাল লেনদেন হয়েছে। এর মাঝে গত ২৮ আগস্ট ২০২২ তারিখ ফ্লোর প্রাইস ভেঙে উপরে ওঠার চেষ্টা করে। আর আজও ফ্লোর প্রাইস ভেঙে উপরে ওঠার চেষ্টা করে।

গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল সর্বনিম্ন ৭৭ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১৪৫ টাকায় ৮০ পয়সা।

২০১৬ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন মূলধন ২৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১৬২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ৫৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১৬ কোটি ২৫ লাখ ৩৫ হাজার ৪৮৯টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৩০.৯৩ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২২.৫২ শতাংশ, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪৬.৫৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

৩০ জুন ২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য কোম্পানিটি ১৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ১০ শতাংশ ক্যাশ এবং ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *