নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল ফিড লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির দায়ে চার বিনিয়োগকারীকে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
কারসাজির সঙ্গে জড়িত চার বিনিয়োগকারী হলেন, প্যারামাউন্ট টেক্সেটাইলের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মোহাম্মদ জাহিদুল আবেদিন, এজি মাহমুদ, সাইফ উল্লাহ এবং এসএম মোতাহার। এর মধ্যে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের সিএফওকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা, এজি মাহমুদকে ৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া তার ভাই সাইফ উল্লাহকে ৮৩ লাখ এবং তার সহযোগী এস এম মোতাহারকে ১৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এ বিনিয়োগকারীরা সিরিয়াল ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে ন্যাশনাল ফিডের শেয়ার ২০২১ সালে ১১ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে ১৩৩ শতাংশ দাম বাড়িয়ে বিক্রি করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইর তদন্ত প্রতিবেদন এ চিত্র উঠে আসে।
এতে দেখানো হয়, ১১ এপ্রিল ন্যাশনাল ফিডের শেয়ার দাম ছিল ১৫ টাকা ৬০ পয়সা ১৭ এপ্রিল সেই শেয়ার বিক্রি হয়েছে ৩৬ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাৎ ২০ টাকা ৯০ পয়সা বেড়েছে। এভাবে শেয়ারের মূল্য প্রভাবিত করা আইনত দণ্ডনীয়।
কারসাজি প্রমাণিত হওয়ায় বিএসইসির কমিশনার আব্দুল হালিম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে অক্টোবর মাসে শাস্তি হিসেবে এ অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। জরিমানার অর্থ আগামী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিএসইসির ইস্যুকৃত ব্যাংক ড্রাফট/পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা প্রদান করতে বলা হয়েছ। তা না হলে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেবে কমিশন।
বিষয়টি নিশ্চিত করছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তবে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
বিএসইসি তথ্য মতে, ন্যাশনাল ফিডের শেয়ার কারসাজির মাধ্যমে প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্স কোম্পানি এবং তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো মিলে ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে। এছাড়াও এ চক্রটির অবিক্রীত মুনাফা রয়েছে ৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
কারসাজির বিষয়ে জানতে কমিশনের শুনানিতে অংশ নেন টিম লিডার ও প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের সিএফও মোহাম্মদ জাহিদুল আবেদিন।
তিনি বলেন, ন্যাশনাল ফিডের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের কারণে মার্কেটের শেয়ার মূল্যে প্রভাব পড়বে, সেটা বোধগম্য ছিল না। দামে প্রভাব পড়বে জানলে কখনোই এভাবে শেয়ার কিনতাম না। অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য বিব্রত ও ক্ষমা প্রার্থী।
এছাড়াও এজি মাহমুদ কারসাজির মাধ্যমে ১৫ কোটি ৬৯ লাখ ৬১ হাজার ১৪৬ টাকা মুনাফা করেছে। আর অবিক্রীত মুনাফা রয়েছে ২ কোটি ৪৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। তাকে শুনানিতে ডাকা হলে তারা কারসাজির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। এই ঘটনায় তার ভাই সাইফ উল্লাহকে ৮৩ লাখ টাকা এবং এস এম মোতাহারকে ১৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়াও জাহিন স্পিনিং মিলসের শেয়ারেও কারসাজি দায়ে সাইফ উল্লাহকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই শেয়ার কারসাজিতে তার ১ কোটি টাকা মুনাফা হয়েছে।