নিজস্ব প্রতিবেদক:
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত টেলিযোগাযোগ খাতের কোম্পানিুলোর মুনাফা বেড়েছে ২০২২ সালের শেষ ছয় মাস তথা জুলাই-ডিসেম্বরে। আলোচ্য সময়ে আগের হিসাব বছরের একই সময়ের তুলনায় এ খাতের কোম্পানিগুলোর আয় বেড়েছে। পাশাপাশি এ সময়ে অধিকাংশ কোম্পানির কর-পরবর্তী নিট মুনাফায়ও প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
তালিকাভুক্ত টেলিযোগাযোগ খাতের কোম্পানি তিনটির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল), গ্রামীণফোন লিমিটেড ও রবি আজিয়াটা লিমিটেড। এর মধ্যে বিএসসিসিএলর হিসাব বছর গণনা করা হয় জুলাই-জুন সময়ে এবং বহুজাতিক কোম্পানি গ্রামীণফোন ও রবির হিসাব বছর গণনা করা হয় জানুয়ারি-ডিসেম্বর সময়ে।
গত বছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে টেলিযোগাযোগ খাতের কোম্পানি বিএসসিসিএলের মোট আয় হয়েছে ২৬২ কোটি টাকা। এর আগের বছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ২০৩ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ২৯ দশমিক ০৬ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৪৩ কোটি টাকা। এর আগের বছরের একই সময়ে এ মুনাফা ছিল ১১৩ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ২৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। গত বছরের শেষ ছয় মাসে মুনাফা বাড়ার কারণ হিসাবে কোম্পানিটি জানিয়েছে, এ সময়ে তাদের ব্যবসা বাড়ার পাশাপাশি দক্ষ ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য নিট মুনাফায়ও প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
এ খাতের বহুজাতিক কোম্পানি গ্রামীণফোন লিমিটেডের গত বছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে মোট আয় হয়েছে ৭ হাজার ৬১৯ কোটি টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ৭ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৫ দশমিক ১০ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ২৭৯ কোটি টাকা। আগের হিসাব বছরে এ মুনাফা ছিল ১ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ। গত বছরের শেষ ছয় মাসের বেশির ভাগ সময়ই কোম্পানিটির সিম বিক্রি নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল। মূলত গত বছরের ২৯ জুন থেকে কোম্পানিটির সিম বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। সে হিসাবে গত বছরের শেষ ছয় মাসের বেশির ভাগ সময়ই সিম বিক্রি বন্ধ থাকা সত্ত্বেও কোম্পানিটির আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
এদিকে ২০২২ হিসাব বছরজুড়ে কোম্পানিটির মোট আয় হয়েছে ১৫ হাজার ৪০ কোটি টাকা। এর আগের হিসাব বছরে এ আয় ছিল ১৪ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। আর সর্বশেষ হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৩ হাজার ৯ কোটি টাকা। এর আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা। আলোচ্য হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ৯৫ শতাংশ চূড়ান্ত ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে গ্রামীণফোনের পর্ষদ। এর আগে কোম্পানিটি আলোচ্য হিসাব বছরের জন্য ১২৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন ক্যাশ ডিভিডেন্ডে দিয়েছিল। সব মিলিয়ে ২০২২ হিসাব বছরের জন্য মোট ২২০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি।
টেলিযোগাযোগ খাতের আরেক বহুজাতিক কোম্পানি রবি আজিয়াটার গত বছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে আয় হয়েছে ৪ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা। এর আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৪ হাজার ১৩১ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৮ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৫৪ কোটি টাকা। এর আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৯৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৫৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
এদিকে ২০২২ হিসাব বছরজুড়ে কোম্পানিটির মোট আয় হয়েছে ৮ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। এর আগের হিসাব বছরে এ আয় ছিল ৮ হাজার ১৪২ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৫ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৮২ কোটি টাকা। আগের হিসাব বছরে এ মুনাফা ছিল ১৮০ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ১ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। সর্বশেষ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৭ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ডের সুপারিশ করেছে কোম্পানিটির পর্ষদ।