চেক নগদায়নের নির্দেশনা থেকে সরে আসছে বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেক নগদায়নের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল, শেয়ারবাজারের স্বার্থে তা থেকে সরে আসছে। বাজারের টানা পতন এবং বাজার সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে চেক দিয়ে শেয়ার কেনার সুযোগ দিয়ে আইন তৈরি করছে প্রতিষ্ঠানটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে, চেক নগদায়ন না করেই শেয়ার কেনার সুযোগ রেখে নতুনভাবে আইন করতে যাচ্ছে বিএসইসি। তবে ব্রোকারেজ হাউজে চেক জমা দিলেও সেটি ব্যাংকে না পাঠিয়ে শেয়ার কেনার মতো জালিয়াতির আশ্রয় নিলে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। রোববার রাতে বিএসইসির চেয়ার‌ম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমি একটা সলিউশন করে দিয়েছি আজকের মিটিং করে। বাস্তবতার নিরিখে ব্যবস্থা দুই একদিনে মধ্যেই হয়ে যাবে। আইন পরিবর্তন হবে এজন্য অর্ডার দিয়ে করতে পারিনি। আইন বানাচ্ছে হয়তো কালকে বা পরশুর মধ্যে হয়ে যাবে, দিয়ে দেবো। একটা ব্যবস্থা করে দেবো যাতে গভর্ন্যান্সও থাকে জালিয়াতিও না করতে পারে। আর যদি জালিয়াতি করে তার দায়ভারও তাকে নিতে হবে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, চেক দিয়ে শেয়ার কেনার সুযোগ করে দিচ্ছি, কিন্তু চেক তো সঙ্গে সঙ্গে জমা দিতে হবে নাকি। পাঁচদিন তো আর রেখে দিতে পারে না। পরবর্তী পসিবল আওয়ার বা ব্যাংকিং ডেতে জমা দিতে হবে।

এর আগে গত ১১ অক্টোবর স্টক ব্রোকারদের প্রতি জারি করা বিএসইসির এক নির্দেশনায় বলা হয়, চেকের টাকা নগদায়নের আগে তা দিয়ে শেয়ার কেনা যাবে না। আর এর নেতিবাচক প্রভাব শেয়ারবাজারে লক্ষ্য করা যায়। পরদিন থেকেই শেয়ারবাজারে লেনদেন কমে যেতে থাকে। টানা পতন হতে থাকে শেয়ারবাজারের সূচকও।

এর মধ্যে স্টক ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বা ডিবিএর পক্ষ থেকে ডিএসই ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে যে, চেক নিয়ে নির্দেশনা না পাল্টালে শেয়ারবাজারে চাপ আরও বাড়বে। ১৭ অক্টোবর এই চিঠির বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে সত্যি সত্যি চাপের বিষয়টি দেখা যায় পরদিন থেকেই।

শিবলী রুবাইয়াত ইসলাম চেয়ারম্যান দেশের বাইরে থাকায় বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না বিএসইসি। আর চেয়ারম্যান দেশে ফিরে আসার আগ পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই শেয়ারবাজারে পতন লক্ষ্য করা গেছে। তবে বিএসইসির চেয়ারম্যান দেশে ফেরার পর প্রথম কার্যদিবসেই সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকে বসেন এবং বিষয়টি সমাধানের জন্য ব্যবস্থাও গ্রহণ করেন।

বিএসইর এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে আমায়া সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এফবিসিসিআই’র পরিচালক আসলাম সেরনিয়াবাত বলেন, বিএসইসি খুব ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও শক্তিশালী হবে।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার পরেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে। মালয়শিয়ায় শ্রম বাজার চালু হচ্ছে। এতে দেশটিতে বড় আকারে রেমিট্যান্স আসার সুযোগ তৈরি হবে।

অন্যদিকে, ব্রুনাইয়ের সুলতানের বাংলাদেশে সফরকালে অনেকগুলো সমঝোতা স্বারক সম্পন্ন হয়েছে। এতে ব্রুনাইর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের নতুন মাত্রা তৈরি হবে। সুতরাং দেশের অর্থনীতি নিয়ে শঙ্কার কোন কারণ নেই বলে তিনি মনে করেন। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, দেশের অর্থনীতি ভালো থাকলে শেয়ারবাজারও ভালো থাকবে। এতে দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *